রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নাগরিক সেবা না দিয়ে কর-ট্যাক্স বৃদ্ধি করা চলবে না
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষ্যে গতকাল ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় নিউক্রস রোডে সুমি কমিউনিটি কেয়ারে মহানগর নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহবায়ক কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মোজাহার আলী, সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবলু, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন চাঁদ, লেখক ও গবেষক ড. মিজানুর রহমান নাসিম, পলাশ কান্তি নাগ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে রংপুরে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রংপুর সিটি কর্পোরেশন রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। এই সিটি কর্পোরেশনকে কেন্দ্র করে মানুষের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু মানুষের প্রত্যাশা ও বর্তমান বাস্তবতায় বিস্তর ব্যবধান। প্রতিনিয়ত নগরবাসীর কাঁধে কর-ট্যাক্সের বোঝা বাড়ছে কিন্তু বাড়ছে না নাগরিক সেবা। নাগরিক সেবা নয়, বর্ধিত কর-ট্যাক্সই যেন নবগঠিত সিটি কর্পোরেশনের উপহার। সিটি কর্পোরেশন হিসেবে যাত্রার প্রায় ৩ বছরে কোথাও কোন উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। একটি আধুনিক ও উন্নত নগরীর যে ধারণা তাঁর সাথে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের অবস্থানকে কোনভাবেই তুলনা করা চলে না। নাগরিক সেবা প্রাপ্তি প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। নাগরিক সেবা বঞ্চিত হওয়ার পরেও একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নির্বিকার থাকাটা কখনই সমীচীন নয়। এই সিটি কর্পোরেশনকে কেন্দ্র করে আমাদের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন পূরণে সোচ্চার অবস্থান এখন সময়ের দাবি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নিয়ম বহির্ভূত ও অযৌক্তিক সকল প্রকার বর্ধিত কর-ট্যাক্স প্রত্যাহার, রাস্তা-ঘাট-ব্রীজ-কালভার্ট সংস্কার, কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ, পানি ও বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ট্রেড লাইসেন্স, ভূমি জরিপ, পানি সংযোগ, নাগরিকত্ব, জাতীয়তা, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশন সনদ ফি কমানো, বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা, শ্যামা সুন্দরী খাল সংস্কার, পূনর্বাসন ছাড়া বস্তি-হকার উচ্ছেদ বন্ধ, যানজট নিরসনে ওভার ব্রীজ নির্মাণ, সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে নতুন নতুন স্কুল নির্মাণ, চিত্ত বিনোদনের জন্য পার্ক, খেলার মাঠ, পাঠাগার প্রতিষ্ঠা, সাবেক পৌরসভার ছাঁটাইকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম বন্ধ, দখিগঞ্জ শ্মশান ও কবরস্থান সংলগ্ন এলাকা থেকে বর্জ্য অপসারণ, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, যত্রতত্র স্থাপিত সাইনবোর্ড, ব্যানার ও বিলবোর্ড অপসারণের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মোজাহার আলী বলেন, এই আন্দোলন রংপুর নগরবাসীর। আমরা নাগরিক সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করবো। এই আন্দোলনে আমরা রংপুর নগরের সর্বস্তরের নাগরিকদেরকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহবান জানাই।
তিনি আরো বলেন, নাগরিক অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***