আজ শুভ মহালয়া, বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন। পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের শুরু। চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া।
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মহালয়া। আজ ভোর সাড়ে ৪টায় চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে আবাহন হয় দেবী দুর্গার। তার আগে ব্রাহ্মণগণ পবিত্র চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীকে আমন্ত্রণ জানান মর্ত্যলোকে। আগামী সোমবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত মহালয়ার দিন থেকেই সনাতন হিন্দু ধর্মের দুর্গা পূজার আগমনী ধ্বনি শোনা যায় মন্দিরে মন্দিরে।
কথিত আছে অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গচ্যুত হয়েছিলেন। চারদিকে অশুভের প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হলেন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকলেও মহাতেজের আলোয় দূর হয় তা। প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তির।
শাস্ত্রীয় বিধান মতে, মহালয়ার অর্থ হচ্ছে মহান আলোয় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে আবাহন। দুর্গা পূজার দুটি পক্ষ (১৫ দিনে একপক্ষ) রয়েছে। একটি হলো পিতৃপক্ষ, অন্যটি দেবীপক্ষ। অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের শেষ, আর পরের দিন প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয় দেবীপক্ষের।
সনাতন শাস্ত্রমতে, মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। আর মহালয়া থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষ। এ বছর মর্ত্যলোকে (পৃথিবীতে) দেবীর আগমন ঘটবে ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে।
আর দেবীর গমন ঘটবে দোলায় চড়ে। যার ফল মড়ক। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। তবে সনাতন বিশ্বাস মতে, দেবী তার অশেষ কৃপায় সবাইকে রক্ষা করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের মতে, এ বছর ঢাকা শহরে ২২৩টি-সহ সারা দেশে প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মহালয়ার সাত দিন পর আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে পাঁচদিনের দুর্গাপূজা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে।
অন্তরে বাজবে দেবী দুর্গাপূজার আনন্দ ধ্বনি। ‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমঃ নমঃ।’
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***