মাত্র চারদিনের ব্যবধানে রিফাত হোসেন এর বক্তব্য পুরো বদলে গেল
নারায়নগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ স্কুলের শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভদ্রকে লাঞ্ছিতের ঘটনার সূত্রপাত ওই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ ওঠে রিফাত হোসেন নামের ওই শিক্ষার্থীকে ক্লাসে মারধরের সময় ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেন শিক্ষক শ্যামল।
১৬ মে একাত্তর টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে রিফাত হোসেন ও তার মা রীমা বেগম জানায়, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেননি। এই অভিযোগে কারো কাছে বিচারও চাননি তাঁরা।
তবে ওই সাক্ষাতকারের চারদিন পর শুক্রবার নারায়নগঞ্জে হেফাজতের সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সেই ছাত্র রিফাত হোসেন দাবি করে, সেদিন প্রধান শিক্ষক ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেছিলেন। সে শিক্ষকের বিচার দাবি করে।
মাত্র চারদিনের ব্যবধানে রিফাত হোসেন এর বক্তব্য পুরো বদলে যাওয়ায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান রিফাত শুক্রবার হেফাজতের সমাবেশে আসে নতুন পাঞ্জাবি পড়ে। পোষাকের সাথে বদলে যায় তার বক্তব্যও।
সমাবেশে রিফাত বলে, ‘হেড স্যার ক্লাসে ছেলেমেয়েদের খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে আমাকে বলেন- তুইও নাপাক তোর আল্লাহও নাপাক। পরে হেড স্যার আমাকে মারধর করেন। আমি ব্যথা পাওয়ায় আল্লাহ আল্লাহ বলতে থাকলে হেড স্যার বলেন- আল্লাহ বলতে কিছু নাই।’
রিফাত আরও জানায়, ‘আমাকে মারধর করেছে সেটার বিচার চাই না, আল্লাহকে গালি দিয়েছে- আমি তার বিচার চাই। প্রধান শিক্ষক আমাকে মারধর করছে কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী এর বিচার করে নাই।’
আরও পড়তে পারেন: শ্যামল কান্তি স্বপদে বহাল, স্কুল কমিটি বাতিল
দু’ ধরণের বক্তব্যের পর রিফাতের কোন কথাটি সত্য এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রনালয় গঠিত তদন্ত কমিটি শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অভিযোগের প্রমাণ পায়নি বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
গত ৮ মে স্কুলের দশম শ্রেণীর বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র রিফাত হোসেনকে মারধর করে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। ওই ঘটনায় ১০ মে রিফাতের মা রিনা বেগম লিখিত একটি অভিযোগ স্কুল কমিটিকে দেওয়া হয়। তবে ওই অভিযোগে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয় কিছু জানানো হয়নি।
জানা গেছে, ১৩ মে সকাল সাড়ে ১০টায় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে রিনা বেগমকে হাজির করানো হয়। আর তখনই মসজিদের মাইকে ইসলাম ধর্মকে আঘাতের বিষয়টি মাইকিং করা হয়। ওইদিন স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে কান ধরে ওঠবস করানো হয় শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সাংসদ সেলিম ওসমানের শাস্তি দাবি করেন প্রতিবাদকারীরা।
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***