রোহিঙ্গা সংকটে যুদ্ধ নয়, আলোচনায় সমাধান: প্রধানমন্ত্রী

তারিখ:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটে যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে বিশ্বাস করেন। “আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।” ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক’-এর (বিএবি) পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা-দের সহায়তার জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তরকালে তিনি এসব কথা বলেন। দুস্থ মানবতার সহায়তায় এগিয়ে আসায় বিএবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অ্যাসোসিয়েশন মানবকল্যাণে সবসময়ই তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’

গত মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে তিনি যে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তার মাধ্যমেই চলমান রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

গত কয়েক যুগ ধরে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসছে বাংলাদেশ, যারা নিজ দেশ মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার। অগাস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর নতুন করে আরও পাঁচ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মানবিক কারণে রোহিঙ্গা-দের আশ্রয় দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘মানবিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের দায়িত্ব…রোহিঙ্গাদের বিপর্যয়ের সময় আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতাম তবে তা অমানবিক হতো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে যেমন অত্যাচার করেছিল, মিয়ানমারের এই বাস্তুচ্যুত নাগরিকরাও তাদের দেশে সে রকম অত্যাচারের শিকার। ওই সময় তিন কোটি বাঙালি গৃহহারা হয়েছিল, আর শরণার্থী হয়েছিল এক কোটি।

১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানার শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৬ বছর শরণার্থী হিসেবে থাকার কারণে আমরা রোহিঙ্গা-দের দুঃখ-যন্ত্রণা বুঝি।’ নির্যাতিত রোহিঙ্গা-দের সহায়তায় সব শ্রেণির মানুষের এগিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ মানবতাবোধ-সম্পন্ন। তারা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সহায়তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত ৫ দফা প্রস্তাব হলো—

১. মিয়ানমারকে অবশ্যই বিনা শর্তে রাখাইন রাজ্যে দ্রুত ও চিরতরে সহিংসতা ও জাতিগত নিধন বন্ধ করতে হবে।

২. জাতিসংঘ মহাসচিবকে দ্রুত মিয়ানমারে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে মিয়ানমারের সব নাগরিককে সুরক্ষা দিতে হবে। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের ভেতরে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তুলতে হবে।

৪. বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা-দের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

৫. কফি আনান কমিশন রিপোর্টের সুপারিশ অবশ্যই বিনাশর্তে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***

শেয়ার করুন:

Subscribe

জনপ্রিয়

এমন আরও
সম্পর্কিত

সওজ প্রকৌশলী ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ ১২ কোটি টাকার

প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও...

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বেরোবি শিক্ষার্থী তুষারের আত্মহত্যা

রংপুরের সাহেবগঞ্জের তিনমাথার মোড় এলাকার বাসিন্দা এবং বেরোবির শিক্ষার্থী...

বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ

দেশে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান প্রচার...

রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে এএসআই নিহত

রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পিয়ারুল ইসলাম...