বিমান চালিয়ে শীর্ষ ব্যক্তিদের বাড়িতে ‘হামলার পরিকল্পনা’য় পাইলট গ্রেপ্তার

তারিখ:

বিমান চালিয়ে শীর্ষ ব্যক্তিদের বাড়িতে ‘হামলার পরিকল্পনা’র অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফার্স্ট অফিসার সাব্বির এমামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। র‌্যাবের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতদের বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের বাসভবনে আঘাত করা অথবা বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপাচ্যে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো।

গ্রেপ্তার বাকি তিনজন হলেন- সাব্বিরের মা সুলতানা পারভীন (৫৫), সাব্বিরের মামাত ভাই আফিফুর রহমান আসিফ (২৫) ও ওই এলাকার চা দোকানদার মো. আলম (৩০)। সাব্বির বিমানের ফার্স্ট অফিসার হলেও সেপ্টেম্বর মাসে দারুস সালাম এলাকায় র‍্যাবের অভিযানের সময় নিহত জঙ্গি আবদুল্লাহর ‘সহযোগী’।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টা থেকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার মধ্যে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

মুফতি মাহমুদ খান দাবি করেন, ইউরোপে সম্প্রতি গাড়ি ও ট্রাক চালিয়ে যে ধরনের নাশকতা চালিয়েছে জঙ্গিরা, এখানেও সেই ধরনের নাশকতার ছক আঁকছিল জঙ্গিরা। র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, অন্য জঙ্গী সদস্যদের বিমান চালনার প্রশিক্ষণ দেবার পরিকল্পনাও তাদের ছিল।

আরও পড়তে পারেন: পীরগঞ্জে ঋণের দায়ে এক যুবকের আত্মহত্যা

টাঙ্গাইলে জেএমবির জঙ্গি দুই ভাইকে আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে মিরপুরের দারুস সালাম থানার বর্ধনবাড়ি এলাকায় ছয় তলা একটি ভবন ঘিরে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। পরদিন রাতে আত্মসমর্পণের আহ্ববান উপেক্ষা করে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি আবদুল্লাহ। ৬ সেপ্টেম্বর ওই ভবনের পঞ্চমতলায় ঢুকে জঙ্গি আব্দুল্লাহ ও তার দুই স্ত্রী, দুই সন্তানসহ সাতজনের খুলি ও পোড়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

‘কমল প্রভা’ নামের ওই বাড়ির মালিক হাবিবুল্লাহ বাহার আজাদকে সেই সময়ই আটক করে র‌্যাব। তখনই জানা যায়, তার ছেলে সাব্বির বিমানের পাইলট।

কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে মুফতি মাহমুদ খান জানান, সাব্বির ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি থেকে উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। ২০১০ সালে থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারওয়েজে চাকরি করেন। ওই বছরই তিনি বিমানের পাইলটের চাকরি নেন।

বিমানের ফার্স্ট অফিসার হিসেবে সাব্বির বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ চালাতেন। গত ৩০ অক্টোবর তিনি ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেন। তবে জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল।

নিহত জঙ্গি সারোয়ার জাহানের কাছ থেকে সাব্বির বায়াত গ্রহণ করেন। গুলশানে হোলি আর্টিজানে হামলার আগে ও পরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এরই অংশ হিসেবে সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাতের পরিকল্পনা করেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও তাঁর ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৬ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে জঙ্গি আব্দুল্লার সহযোগী বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তার দেওয়া তথ্যেই মিরপুর থেকে সাব্বিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***

শেয়ার করুন:

Subscribe

জনপ্রিয়

এমন আরও
সম্পর্কিত

সওজ প্রকৌশলী ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ ১২ কোটি টাকার

প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও...

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বেরোবি শিক্ষার্থী তুষারের আত্মহত্যা

রংপুরের সাহেবগঞ্জের তিনমাথার মোড় এলাকার বাসিন্দা এবং বেরোবির শিক্ষার্থী...

বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ

দেশে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান প্রচার...

রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে এএসআই নিহত

রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পিয়ারুল ইসলাম...