খুব আশা নিয়ে স্বামীর ঘর করতে যান রেইন আক্তার। বয়স সবে ২৫। বধূ সেজে শ্বশুর বাড়ি যেতে না যেতেই তার উপর শুরু হয় যৌতুকের জন্য মানসিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে তা শারিরীক নির্যাতনে রূপ নেয়। সব লাঞ্ছনা সহ্য করেও স্বামীর ঘরে সারাজীবন থাকতে চেয়েছিলেন রেইন।
কিন্তু পাষন্ড স্বামী তার সে আশা পূরণ হতে দেয়নি। শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের পর নির্যাতন করে এক পর্যায়ে আগুণে পুড়িয়ে রেইনকে মারার চেষ্টা চালায় তার স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকেরা।
পীরগঞ্জের কুতুবপুর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামে ২ আগস্ট রবিবার ভোর ৬ টায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, রেইন আক্তারের সঙ্গে ৩ বছর আগে আ. খালেক(৩৬) এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে খালেক ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য রেইন আক্তারকে চাপ দিয়ে আসছিল। রেইন আক্তারের ঘরে সৎ মা থাকায় সে টাকা এনে না দিতে পারায় বিভিন্ন সময় রেইন আক্তারকে মারপিট ও নির্যাতন করে খালেক ও তার পরিবারের লোকজন। এরই জের ধরে শনিবার দিবাগত রাতে খালেকের সাথে রেইন আক্তারের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেইন আক্তারকে বেদম মারপিট করে খালেক। ক্রোধে উন্মত্ত খালেক শেষে রেইনের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। রেইনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
নাম প্রকাশের অনেকে জানান, খালেক একই এলাকার মালেক ও জবা নামের দুজন খারাপ চরিত্রের লোকের সাথে চলাফেরা করত এবং জুয়া খেলায় অভ্যস্ত ছিল সেখানে টাকার প্রয়োজন হলেই তাদের পরামর্শে স্ত্রী রেইন আক্তারকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে বলতেন। এক পর্যায়ে তাদের উস্কানীতে রেইন আক্তারকে আগুনে পুড়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে বলে জানান।
এ ঘটনায় রেইনের বড় বোন তাওহীদা বেগম বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। রবিবার বেলা ২টায় খালেককে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
বর্তমানে রেইন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসারত আছেন।
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***