রংপুরের পীরগঞ্জে ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার চারদিন পর লাশ উদ্ধার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল মমিনের ছেলে রিয়াদ প্রধানকে (১৮) পুলিশ আটক করেছে।
পুলিশ জানায় পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর গ্রামের শাহাজাহান আলীর মেয়ে তানজিলা খাতুন চুমকি (৯) মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ ছিলো। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজের পরও সন্ধান না পাওয়ায় এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন তার বাবা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পীরগঞ্জ উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিখোঁজ চুমকির সন্ধান চেয়ে মাইকিং করেন তার স্বজনরা।
এদিকে শুক্রবার সকালে একই গ্রামের প্রভাবশালী মোমেন প্রধানের বাড়িতে ঘরের ভেতরে একটি লাশ পুঁতে রাখা আছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয়রা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোমেন প্রধানের ছেলে রিয়াদের ঘরে তল্লাশি করে খাটের নিচে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় শিশু চুমকির লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রিয়াদকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরও পড়তে পারেন: তাহলে সবার আগে সুইসাইড করতাম আমি – প্রভা
রিয়াদের চাচাতো ভাই শিক্ষক হাসান আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রিয়াদের মা বাড়িতে ফিরে এসে ছেলের ঘরের খাটের নিচে মাটি খোঁড়া দেখতে পেয়ে ছেলেকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এ সময় রিয়াদ মাকে সব ঘটনা খুলে বললে আমরা রিয়াদকে সঙ্গে করে নিয়ে পীরগঞ্জ থানায় যাই।’
তানজিলার লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়ার পরই তাঁর মা সুফিয়া বেগম বাড়িতে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তাঁর বাবা শাহাজান আলীও নির্বাক হয়ে পড়েছেন।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, ‘গত মঙ্গলবার পীরগঞ্জ কারিগরি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র রিয়াদ প্রতিবেশী শাহজাহানের শিশুকন্যা দুরামিঠিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণীর ছাত্রী তানজিলা খাতুন চুমকিকে একা পেয়ে নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় চুমকি চিত্কার করে এবং ঘটনা প্রকাশ করার কথা বলে। অবস্থা বেগতিক দেখে রিয়াদ শ্বাসরোধে চুমকিকে হত্যার পর তার খাটের নিচে গর্ত খুঁড়ে লাশ পুঁতে রাখে। গত বৃহস্পতিবার রিয়াদের বাবা মা বাড়িতে এসে ঘরের মেঝে দেখেই আঁঁচ করতে পারেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রিয়াদ বাবা মার কাছে পুরো ঘটনা প্রকাশ করে। পারিবারিকভাবে চুমকির বাবার সাথে আলোচনা করে গতকাল শুক্রবার সকালে বিষয়টি পীরগঞ্জ থানার পুলিশকে অবগত এবং রিয়াদকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। রিয়াদ পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিল কি না তা রিয়াদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হচ্ছে। ওই ঘটনায় শিশুর বাবা শাহজাহান আলীর দায়ের করা মামলায় রিয়াদকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***
কি বীভৎস!