পহেলা বৈশাখ। বাংলা সনের প্রথম দিন। দিনটি বাঙালিরা নববর্ষ হিসেবে পালন করে থাকে। এটি বাঙালির একটি সার্বজনীন লোকউৎসব। এদিন বর্ণ, ধর্ম, ধনী, গরীব নির্বিশেষে সব ভুলে আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয় নতুন বছরটিকে।
সর্বাঙ্গীন কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো এ নববর্ষ। অতীতের ব্যর্থতার গ্লানি মুছে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ। এদিন সরকারি ছুটি থাকে।
বাংলা নববর্ষকে উৎসবমুখর করে তোলে বৈশাখী মেলা। একসময় দেশের গ্রামাঞ্চলে চৈত্রসংক্রান্তিতে যে মেলার আয়োজন করা হতো, সেটাই কালক্রমে বৈশাখী মেলার রূপ ধারণ করে। পরে রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগ ও স্পর্শে তা আরও হৃদয়গ্রাহী ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। বর্তমানে তা বাঙ্গালীর অন্যতম ও সর্বজনীন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।
পীরগঞ্জেও অনেকদিন ধরে চলে আসছে এই বৈশাখী মেলা। এখানকার বড়বিলার কাছে ধান ক্ষেতের পাশে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন সংগঠন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই মেলা বসে। এইবছর পীরগঞ্জ এর এস.এস.সি. ব্যাচ ১৯৯০ এর উদ্যোগে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ থেকে সাতদিন ব্যাপী চলবে এ মেলা।
স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব প্রকার হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী এই মেলায় পাওয়া যাবে। বাচ্চাদের খেলনা, মহিলাদের সাজ-সজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন লোকজ খাদ্যদ্রব্য যেমন: চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা, বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি প্রভৃতির বৈচিত্র্যময় সমারোহ থাকছে মেলায়। মেলায় ঐতিহ্যবাহী পাতাচালা খেলা, লাঠি খেলা, ঢোলের লড়াই, সাঁওতাল নৃত্য, মোটরসাইকেল খেলা থাকছে।
এছাড়া প্রতিদিনি সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে যাত্রা, গম্ভীরা গান, গাজীর গান, পালাগান, কবিগান, জারিগান, আলকাপ গান ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের লোকসঙ্গীত, বাউল-মারফতি-মুর্শিদি-ভাটিয়ালি ইত্যাদি আঞ্চলিক গান পরিবেশন করা হবে, সাথে থাকবে নাটক, নৃত্য ইত্যাদি। বাচ্চাদের জন্য নাগোরদোলা, চড়কি, ইলেক্ট্রনিক ট্রেন তো থাকছেই।
পীরগঞ্জবাসীর কাছে এক অনাবিল মিলন মেলা এই বৈশাখী মেলা।
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***