৭টি কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশি হামলার বিচার ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়াসহ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে ছাত্রজোটের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকায় কলেজ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বর্বরোচিত পুলিশি হামলার প্রতিবাদ, হামলায় দৃষ্টিহীন হয়ে যাওয়া সিদ্দিকুরের উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারকে নেয়া, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে হামলাকারী পুলিশের বিচার করা, অবিলম্বে ফল ও পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, একাডেমিক-প্রশাসনিক চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করাসহ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আজ ২৫জুলাই ’১৭ বেলা ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাব থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। জেলা সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি প্রদ্বীপ বর্মনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জেলা সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আশিকুল ইসলাম তুহিন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রংপুর জেলার সাবেক আহবায়ক প্রত্যয়ী মিজান। সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান বকসি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রাম ও প্রতিবাদ একটি স্বাধীন দেশে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। ৭টি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবনের সংকট নিরসনের দাবিতে ঢাকার রাজপথে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল। কিন্তু আমাদের সরকার তাদের প্রতিবাদটুকু সহ্য না করে পুলিশ বাহিনী দিয়ে সম্পূর্ণ ফ্যাসিস্ট কায়দায় বরাবর টিয়ারশেল-রাবার বুলেট মেরে লাঠিচার্জ করে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের কণ্ঠরোধ করতে রাজপথ রক্তাক্ত করছে। দীর্ঘদিন ধরে এসকল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার সংকট নিরসনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কলেজসমূহ পরিচলনা করার কোনো নীতিমালা ছাড়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭টি কলেজের অন্তর্ভূক্তি বিদ্যমান সংকটকে আরো বৃদ্ধি করেছে। কলেজগুলোর সেশনজট, আবাসন, পরিবহন, গবেষণা, সেমিনার ও ক্লাসরুমের সংকট বিদ্যমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তির ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও চলমান সংকটসমূহ নিরসনের কোনো নীতিমালা ছাত্রসমাজের সামনে হাজির করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা তাদের সংকটসমূহ নিরসনে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে শাহবাগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষণা করে। পূর্বঘোষিত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচীতে পুলিশ বারবার বাধা দেয়। পরবর্তীতে বিনা উস্কানিতে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একজন পুলিশ সদস্য সামান্য দূরত্বে অবস্থানরত শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের মুখ বরাবর টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে সিদ্দিকুরের দুটি চোখই মারাত্মকভাবে আহত হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন আঘাতের তীব্রতার কারণে দুচোখ ফেটে গেছে এবং সিদ্দিকুর রহমান আর দেখতে পাবে না। সিদ্দিকুরসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর এধরনের বর্বর আক্রমণ ও অজ্ঞাতনামা ১২০০ জন শিক্ষার্থীর ওপর মামলা সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রকে আরেকবার উন্মোচিত করলো।”
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নিম্নোক্ত চার দফা দাবি তুলে ধরেন এবং বাস্তবায়নের দাবি করেন। দাবিসমূহ-
১. পুলিশি হামলায় দৃষ্টিহীন হয়ে যাওয়া সিদ্দিকুরের উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।
২. বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে হামলাকারী পুলিশের বিচার করতে
৩. অবিলম্বে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে
৪. অবিলম্বে ফল ও পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, একাডেমিক-প্রশাসনিক চূড়ান্ত নীতিমালা
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***