ব্লুমফন্টেইনে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত হারলো টাইগাররা। সৌম্য সরকারের দারুণ ইনিংসে অনেকটা সময় সমান তালে লড়াই করেও পেরে উঠল না বাংলাদেশ। ১৯৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ৯ ওভার পর্যন্ত দলকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন সৌম্য সরকার। বাঁহাতি ওপেনার যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন, আশা ছিল বাংলাদেশের। আউটের পরই পথ হারাল বাংলাদেশ, এলোমেলো হয়ে গেল মিডল অর্ডার।
ব্লুমফন্টেইনের ম্যানগাউং ওভালে বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৯৫ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৯ উইকেটে ১৭৫ করে বাংলাদেশ। আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ২০ রানে হারলো বাংলাদেশ। প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৯৭ রান তোলা বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে করতে পারল ৬ উইকেটে ৭৮।
সঙ্গী কাউকে না পেলেও ভালোই খেলছিলেন ওপেনার সৌম্য সরকার। হাফসেঞ্চুরির দিকেই ছিলেন একসময়। কিন্তু নিজের ৪৭ রানে তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন ফেহলুকায়ো। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিলে পরে টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সাজঘরে ফেরেন ৩১ বলে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা ওপেনার।
আরও পড়তে পারেন: পীরগঞ্জে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত
সৌম্য ফিরলেও বাকি কাজটা সেরে ফেলার সামর্থ্য নিশ্চয়ই ছিল পরের ব্যাটসম্যানদের। কিছুক্ষণ বড় শট খেলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকও। রানের চাপ কমাতে গিয়ে মুশফিক আউট হয়েছেন তাঁর ‘প্রিয়’ স্লগ সুইপ করতে গিয়ে! মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হয়েছেন ক্যাচ তুলে।
৫২ বলে ৯৫ রান মেলাতে উইকেটে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও সাব্বির রহমান। ১০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ২ উইকেটে ৯৭। বাংলাদেশের ৩ উইকেটে ৯৭। ডট বল বেশি খেলে চাপ বাড়িয়ে রান তোলার তাড়ায় উইকেট হারায় অতিথিরা। ১৫ ওভার শেষেও রানে দু দল ছিল পাশাপাশি। কিন্তু ম্যাচ কার্যত তখনই শেষ। দক্ষিণ আফ্রিকা হারিয়েছিল ৪ উইকেট। বাংলাদেশ তখন হারিয়ে ফেলেছে ৬টি।
প্রোটিয়াদের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন ফেহলুকায়ো, প্যাটারসন, ফ্রাইলিঙ্ক ও হ্যান্ড্রিকস। একটি নেন ফাঙ্গিসো। ম্যাচসেরা হন এবি ডি ভিলিয়ার্স। এর আগে টস হেরে বোলিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। শুরুতে না পারলেও মাঝের দিকে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছিল।
চার পেসার নিয়ে নামা বাংলাদেশ বোলিং শুরু করেছিল স্পিন দিয়ে। সাফল্যও আসে দ্রুত। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে বোল্ড করে হাশিম আমলাকে বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। উল্টোদিকে আগ্রাসী ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে মিরাজ আসলে খানিকটা রাশ টেনে ধরেন তিনি। আর এই ওভারের শেষ বলেই আমলাকে বোল্ড করে ফেরান সাজঘরে। এরপর অবশ্য ডি ভিলিয়ার্স নামলে ঝড়ো গতিতে রান তুলতে থাকে প্রোটিয়ারা। ডি কক ও ডি ভিলিয়ার্স মিলে গড়েন ৭৯ রানের জুটি। আর এই জুটিতেই ১০ ওভারে আসে ৯৭ রান। তবে দশম ওভারে ফের আঘাত হানেন স্পিনার মিরাজ। উঠিয়ে মারতে গিয়ে ৪৯ রানে বিদায় নেন ডি ভিলিয়ার্স। আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত এই হার মেনে নিতে পারেননি বাংলাদেশী ক্রিকেট প্রেমীরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৯৫/৪ (ডি কক ৫৯, আমলা ৩, ডি ভিলিয়ার্স ৪৯, দুমিনি ১৩, মিলার ২৫*, বেহারদিন ৩৬*; সাকিব ১/২৮, মিরাজ ২/৩১, রুবেল ১/৩৪, তাসকিন ০/২১, শফিউল ০/৩৩, সাইফ ০/২০, মাহমুদউল্লাহ ০/২৩)
বাংলাদেশ: ১৭৫/৯ (ইমরুল ১০, সৌম্য ৪৭, সাকিব ১৩, মুশফিক ১৩, সাব্বির ১৯, মাহমুদউল্লাহ ৩, সাইফ ৩৯*, মিরাজ ১৪, তাসকিন ০, শফিউল ১, রুবেল ২*; প্যাটারসন ২/২৯, হেনড্রিক্স ২/৪২, ফ্রাইলিংক ২/৩৩, ফেলুকওয়ায়ো ২/২৫, দুমিনি ০/১৫, ফাঙ্গিসো ১/৩০)
ম্যাচসেরা: এবি ডি ভিলিয়ার্স
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***