রংপুরের সাহেবগঞ্জের তিনমাথার মোড় এলাকার বাসিন্দা এবং বেরোবির শিক্ষার্থী তানভীর আলম তুষার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা যায়। তুষার বেরোবির অর্থনীতি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবগঞ্জ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠিয়েছে। ওই এলাকার ব্যবসায়ী অটোরিকশা গ্যারেজ মালিক মহসিন আলীর একমাত্র ছেলে ছিলেন তুষার।
মহসীন আলী জানান, বেলা ১১টার দিকে তুষারের চাচাতো ভাই সাব্বির আলম তুষারকে ডাকতে এসে রুমের দরজা বন্ধ দেখে। বাড়ির লোকজন ঘরের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে। পরে জানালার ফাঁক দিয়ে তাকালে তাকে ঝুলতে দেখা গেলে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকা নিষ্প্রাণ দেহ নামিয়ে আনা হয়। তুষার ঘরের বিমে বৈদ্যুতিক তার গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর আগে ফেসবুকে ‘I QUIT for ever’ লিখে স্ট্যাটাস দেয় সে। রাতে স্ট্যাটাস দেখে কেউ কেউ মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার সাড়া পায়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, তুষার অনলাইনে জুয়া খেলায় এতোটাই আসক্ত ছিলো যে ল্যাপটপ, মোবাইলফোন বিক্রি করেও সে খেলা অব্যাহত রাখে। তাকে নানাভাবে শাসন করলেও ধারদেনা করেও জুয়া খেলায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। দীর্ঘদিন সে খালার বাড়িতে থাকে। সম্প্রতি তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে পরিবার।
তানভীরের বাবা জানায়, তার ছেলে করোনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অনলাইন জুয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। গত দেড় বছরে টাকা চাওয়া নিয়ে প্রায়ই বাড়িতে ঝগড়াঝাটি হতো। তানভীর জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে অনেক টাকা ঋণ করেছিলো। বুধবার রাতে খাবার খাওয়ার পর টাকা পয়সা চাওয়া নিয়ে বাবা ছেলের ভিতরে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সে নিজের কক্ষে চলে যায়।
বেরোবির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন বলেন, তানভীরের মৃত্যুতে অর্থনীতি বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার শোকাহত। তানভীরের সহপাঠী সঞ্জয় কুমার বলেন, তার এভাবে চলে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***