বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ পরিবর্তন করা হয়নি। বিনিয়োগের জন্য সহায়ক অবস্থা ঠিক রাখার জন্য বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ০.৫% বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে বেসরকারি খাতে ১৬.৮% ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। আগের অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে এটা ছিলো ১৬.৩%। সোমবার দুপুরে (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনের ৫ম তলার জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এক প্রেস কনফারেন্সে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ২০১৭-১৮ অর্থবছরের (জানুয়ারি-জুন) সময়ের জন্য এই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।
ফজলে কবির বলেন ‘সরকারি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণের ব্যবহার কম হচ্ছে’ ফলে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি সংবলিত ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট’ প্রকাশ করা হয়।
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল, মূল্যস্ফীতির হার নির্বাচনের বছরে বৃদ্ধি পাওয়া, আমদানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়াসহ অনেকগুলো কারণে এইরকম মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৯% এর বেশি। চাল, পেঁয়াজ নানারকম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্যস্ফীতির মাত্রা বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রাকেও অতিক্রম করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে, আগামী জুন মাস পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি থাকার কথা ৫.৮% এর নিচে। কিন্তু তার আগেই এই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ফেলছে। বিশেষ করে অসহনীয় মাত্রায় রয়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬.২%। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৯% উঠেছে। অপরদিকে নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্র আগের মতোই ১৫.৮% বজায় রাখা হয়েছে।
প্রতি বছর ২ বার মুদ্রানীতি তৈরি ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১টি অর্থ বছরের জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। মুদ্রার গতিবিধি প্রকাশ করে এই মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ঋণের প্রক্ষেপণের দ্বারা সরকারি-বেসরকারি ঋণের যোগান নির্ধারণ ও মুদ্রার প্রচলন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
আরও পড়তে পারেন: নির্বাচনের বছর, টাকা–পয়সার ছড়াছড়ি হবে : অর্থমন্ত্রীর সতর্ক বার্তা
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***