মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

তারিখ:

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কোন নিপীড়ন হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”।

এর আগে বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বই রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য দায়ী। তিনি মিয়ানমারকে সতর্ক করে বলেছিলেন বিশ্ব কোন নিষ্ঠুরতার প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে বসে থাকবে না।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটছে এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংস ও নির্যাতনমূলক যে আচরণ করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘বেসরকারি গোষ্ঠী ও নজরদারি কমিটিসহ যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই নৃশংসতার জন্য দায়ী হলে তাদের নিশ্চিতভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’ জাতিসংঘের হিসেবে গত ২৫শে অগাস্টের পর থেকে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রাণভয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ছয় লক্ষ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

আরও পড়তে পারেন: রাবিতে ছুরিকাঘাতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আহত

স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেছেন, মিয়ানমার সরকার, সশস্ত্র বাহিনীকে অবশ্যই শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। জরুরী মানবিক সহায়তা এবং রাখাইন থেকে যারা পালিয়ে গেছে তারা যেনো নিরাপদে ফিরে আসতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে তিনি বলেছেন রোহিঙ্গা সমস্যার মূলে যে বৈষম্য সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।

নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়া সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফিলিপাইনের ম্যানিলায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। মিয়ানমারও আসিয়ানের সদস্য। এমন সময়ে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি নিঃসন্দেহে মিয়ানমারকে চাপে ফেলবে।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের বেশ কিছু পুলিশ চৌকিতে হামলার জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দায়ী করে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করলে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে দলে দলে বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করে রোহিঙ্গারা, জাতিসংঘের হিসাবমতে, এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা বলছে, বিদ্রোহীদের দমনের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণ করছে এবং তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ বলছে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূল’ করছে মিয়ানমার। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, পুলিশের চৌকিতে হামলার জন্য দায়ী রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনেই রাখাইনে সেনা অভিযান চালানো হয়।

***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***

শেয়ার করুন:

Subscribe

জনপ্রিয়

এমন আরও
সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে পেনসিলভেইনিয়ায় জয়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের...

হাইয়া সোফিয়া মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় ৮৬ বছর পর

তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল শহরের খ্যাতনামা জাদুঘর হাইয়া সোফিয়া-কে মসজিদে...

অক্সফোর্ডের করোনা (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন সফলভাবে মানবদেহে কার্যকরী

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের উদ্ভাবিত করোনা (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক...

ব্যক্তিগত সহকারীর হাতে ফাহিম সালেহ খুন হন

তরুণ উদ্যোক্তা মোবাইল অ্যাপভিত্তিক রাইড সেবাদাতা পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি...