রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগাহ্-তে অবস্থিত শাহ্ ইসমাঈল গাজী মাজারে দান বাক্সে প্রাপ্ত অর্থ জন কল্যাণ মুলক কাজে ব্যবহার না করে সিংহভাগই তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। মাজারটি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর শাসনামলে ৭১৩ বঙ্গাব্দে স্থাপিত হয়।
বড়দরগাহ্ ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকসহ এলাকার সুধীজন ও মাজার সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক সংলগ্ন বড়দরগাহ্ নামক স্থানে মাজারটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি এটির তদারকি করতেন।
পরবর্তীতে মাজারের পার্শ্বস্থ গ্রাম ইসমাঈলপুরের বাসিন্দা মৃত মেছের উদ্দিন ফকির বিশেষ কৌশলে মাজারটির স্থায়ী তদারকির দায়িত্ব নেন। বিধান অনুযায়ী মাজারের বাক্সে প্রাপ্ত অর্থে এই অঞ্চলের জনকল্যাণমুলক কাজে ব্যবহার হবার কথা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রতি মাসে মাজারের দান বাক্স থেকে কমপক্ষে লক্ষাধিক প্রাপ্ত অর্থ তছরুপের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দীর্ঘ সময় পরে শাহ্ ইসমাঈল গাজী (রহঃ) এর স্মৃতি রক্ষায় মাজার সংলগ্ন স্থানে ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বড়দরগাহ্ শাহ্ ইসমাঈল গাজী (রহঃ) ফাযিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় ১০ বছর পূর্বে মাজারের পাশেই অবস্থিত মসজিদটি সম্প্রসারণ করা হয়।
এর বাইরে মাজারের অর্থে শুধুমাত্র ১৯৭৭-৭৮ খ্রিষ্টাব্দে মাদ্রাসাটিতে ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি ইটের ঘর নির্মাণ করা ছাড়া জনকল্যাণমুলক কোন কাজের নজির এবং কোন প্রকার স্থাপনা গড়ে ওঠেনি। বছরের পর বছর ধরে শাহ্ ইসমাঈল গাজী মাজারে দানের বাক্সে প্রতি মাসে আয়লব্ধ অর্থের সিংহভাগ শুধুই তছরুপ করা হচ্ছে।
আরও পড়তে পারেন: পীরগঞ্জে ৪ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার
মাদ্রাসাটির জমির ৫০ শতাংশ খেলার মাঠ। মাজার উন্নয়নের অজুহাতে কয়েক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কমিটি মাঠটিতে প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বঞ্চিত করে কাঁচামালের পাইকারী বাজার বসিয়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা টোল তুলে ভাগাভাগি করছেন।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর মিয়া জানান, মাদ্রাসা মাঠে কাঁচাবাজার গড়ে তোলার বিষয়টি রংপুরের জেলা প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বর্তমান মাজার কমিটির সভাপতি মোকলেছার রহমান জানান, ‘আমি অল্পদিন হলো মাজার কমিটির সভাপতি হয়েছি। আগে কি হয়েছে বলতে পারবো না।’
ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক জানান, ‘নিয়ম অনুযায়ী মাজার দান বাক্সের চাবি সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তির হাতে থাকার কথা। কিন্তু তা সম্ভবত থাকে না। চাবি থাকে মাজার কমিটির কাছে।’
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***