গত বুধবার সিলেট শহরতলীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শুধুমাত্র ‘চোর’ সন্দেহেই ১৩ বছরের কিশোর রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা।
কিশোর রাজনের চোখে জল। চোখ মুখ ফুলে গেছে। প্রহারে প্রহারে ক্লান্ত। শরীর ক্ষতবিক্ষত। একটা খুঁটিতে পিছমোড়া করে বাঁধা সে বারবার করজোড়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। বলছে, সে চোর নয়। তারপরও উৎসাহী বর্বর মানুষরা তাদের ‘বীরত্ব’ ফলিয়েছে চোর সন্দেহে ধৃত নিরীহ কিশোরটির ওপর। রাজনকে যখন খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হচ্ছিল, পানি খেতে চেয়েও যখন সামান্য পানি পাচ্ছিলোনা সেই বর্বর ঘটনা প্রচণ্ড উল্লাসে ভিডিও করেছে তারা। প্রহারে প্রহারে একসময় রাজন নিষ্ঠুর এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়।
এ ঘটনা জানাজানি হয়েছে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে, যখন ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় জনতার হাতে হাতে। ভিডিওতে দেখে গেছে, কুমারগাঁও এলাকায় একটি দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রায় আধা ঘণ্টা নির্যাতন করা হয় ১৩ বছরের কিশোর শেখ সামিউল আলম রাজনকে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাবার পর পুলিশ জানিয়েছে, রাজনের শরীরে ৬৪ টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, ওই আঘাতের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ওর মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় পুলিশ বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় রাজনের লাশ গুমের সময় হাতেনাতে আটক মুহিত ও তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে।
রাজন হত্যার ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সংবাদ প্রকাশের পর সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন ও দুষ্কৃতকারীদের ফাঁসি দাবি করা হয়।
রাজন হত্যায় অভিযুক্ত একজন আসামী কামরুল ইসলামকে সৌদি আরবে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি এখন সৌদি পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***