আসন্ন বাজেটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ বরাদ্দের দাবিতে ছাত্র ফ্রন্টের অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি

তারিখ:

আসন্ন বাজেটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ বরাদ্দের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। গতকাল ১১ মে সকাল ১১ টায় রংপুর প্রেসক্লাব থেকে বিক্ষোভ মিছিল সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কাচারি বাজারে ডিসি অফিসের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফ্রন্ট জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক আবু রায়হান বকসী, কারমাইকেলের সভাপতি হোজায়ফা সাকওয়ান জেলিড, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

আরও পড়তে পারেন: ক্ষতিগ্রস্ত হাওড়কে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণার দাবিতে রংপুরে সমাবেশ

বক্তারা বলেন, ছাত্র সংখ্যার বিচারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার প্রধান ধারা। শিক্ষার্থী প্রায় ১৫ লক্ষ। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যূনতম আয়োজন ছাড়াই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পাঠদান প্রক্রিয়া। চারটি অনার্স আর একটি মাস্টার্স ব্যাচের পাঠদানের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক-ক্লাসরুমের বন্দোবস্তটুকুও নেই। পর্যাপ্ত না হলেও নিয়ম অনুযায়ী কোনো কলেজে অনার্স থাকলে প্রত্যেক বিভাগে ন্যূনতম ৭ জন এবং মাস্টার্স থাকলে ১৩ জন শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু কোনো কলেজেই এই ন্যূনতম পরিমাণ শিক্ষকও নেই। দেশের ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোতেই শিক্ষক সংকট চরম মাত্রায় বিরাজমান। কোনো ডিপার্টমেন্টেই প্রতি বর্ষের জন্য একটি করেও ক্লাসরুম বরাদ্দ নেই। একটা ক্লাসরুমে কিভাবে পাঁচটি বর্ষের পাঠদান হবে? তাই চাপ কমাতে কলেজে একই সময়ে ২/৩ সেশনের ক্লাস নেয়। ডিগ্রি ও মাস্টার্স কোর্সের ক্লাস প্রায় হয় না। এছাড়া ছাত্র সংখ্যার সাথে ক্লাসরুমের সংখ্যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। সারাদেশের কলেজগুলোরও একই চিত্র। শিক্ষক সংকটে কলেজে কোনরকমে ক্লাস, ইনকোর্স পরীক্ষা, পরীক্ষার উিটি ও খাতা মূল্যায়ন সবই জোড়াতালি দিয়ে চলছে! ফলে শিক্ষার মান কমছে। এছাড়া কোনো বর্ষের পরীক্ষা মানেই কলেজে ক্লাস বন্ধ, একটি বর্ষের ইনকোর্স পরীক্ষায় ঐ বিভাগে কোনো বর্ষের ক্লাস হয় না। পূর্বে আন্দোলনের কারণে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুপুর ২টা থেকে পরীক্ষা নেবে। এতে কলেজে ৯-১১/১২ টা পর্যন্ত ক্লাসের সুযোগ থাকতো; কিন্তু ২য়/৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে হওয়ায় এ বছর জানুয়ারিতে প্রথম বর্ষের কোনো ক্লাস হয়নি। এমনিতেই ক্লাসরুম সংকট, পরীক্ষাজনিত বন্ধ আর সরকারি ছুটি মিলিয়ে কলেজগুলোতে প্রতি সেশনে ক্লাস হয় গড়ে মাত্র ৩০-৫০ দিন! অথচ ক্র্যাশ প্রোগ্রামে ২২৫ দিন ক্লাস হওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে। সিলেবাস শেষ না করেই নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা। উচ্চশিক্ষার একজন শিক্ষার্থী হয়েও সিলেবাস শেষ করতে দারস্থ হতে হচ্ছে প্রাইভেট-কোচিংয়ের। শিক্ষা আয়োজনের এ সমস্যার সাথে যুক্ত হয়েছে প্রতি বছর বেতন ফি বৃদ্ধি। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত ঘরের ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’।

বক্তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান সংকট নিরসনে আসন্ন বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান এবং উচ্চশিক্ষায় ৫ গুণ বেতন বৃদ্ধির চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***

শেয়ার করুন:

Subscribe

জনপ্রিয়

এমন আরও
সম্পর্কিত

সওজ প্রকৌশলী ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ ১২ কোটি টাকার

প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও...

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বেরোবি শিক্ষার্থী তুষারের আত্মহত্যা

রংপুরের সাহেবগঞ্জের তিনমাথার মোড় এলাকার বাসিন্দা এবং বেরোবির শিক্ষার্থী...

বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ

দেশে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান প্রচার...

রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে এএসআই নিহত

রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পিয়ারুল ইসলাম...