শেষ হয়ে গেলো রংপুর সিটি নির্বাচন। ছোট বড় সব রাজনৈতিক দল ব্যস্ত নিজেদের হিসেবের খাতা মেলাতে। পত্রিকাগুলোর তো কথাই নেই বিজয়ী বিজিত সব প্রার্থীর ফটো আর ক্যাপশন দিয়ে নিউজ করতে ব্যস্ত। আর সদ্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করা ভোটাররা ব্যস্ত ভবিষ্যতের হিসেব নিকেষে। আর ভোটের বাইরের আমরা দেশবাসী ব্যস্ত নির্বাচন নামক সিনেমাটির পরিচালক কতখানি সফল বিফল সে হিসেব কষতে।
নাদিরা খানম(হিজড়া), এম এ (ইংরেজি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এমন একটি পোস্টার ঝুলে ছিলো রসিক সিটি কর্পোরেশনের ১৮, ২০ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন পয়েন্টে। মজার বিষয় হলো মানুষ তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়েও নেয়নি। ৭৫৫১ টি ভোট পেয়ে হয়েছেন দ্বিতীয়।
আদমজী জুট মিলের প্রোডাকশন ম্যানেজার সিরাজুল ইসলামের চার সন্তানের একজন নাদিরা। তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারী হওয়ায় একসময় নিজের বাবা মাকেও অপরিচিত মনে হতে থাকে তাঁর। বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন মামার বাড়িতে। সেখান থেকে নিঃসন্তান মামার এক বন্ধু তাকে লালন পালনের ভার নেন। দিনাজপুর আদর্শ কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে এমএ পূর্বভাগে ভর্তি হন। সফলতার সাথে পাশ করে বের হয়েও আসেন ১৯৯৯ সালে।
যেখানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলোকে এখনো সমাজে ভিন্ন চোখে দেখা হয়। রাষ্ট্র নিজেও তাদের অধিকারগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়নি সেখানে রংপুর এর মফিজ মানুষগুলো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে দেখিয়ে দিলো মানবতা এখনো হারিয়ে যায়নি পুরোপুরি।
নির্বাচন শেষে জয়ীদের বক্তব্য ছিলো জনতার বিজয় হয়েছে। পরাজিতদের বক্তব্য ছিলো রংপুরে আ.লীগের রাজনৈতিক বিজয় হয়েছে। আসলে রংপুরে বিজয় হয়েছে মানবতার, মনুষ্যত্বের।
আরও পড়তে পারেন: অর্থনীতি সমিতির নির্বাচনে সভাপতি বারকাত, সম্পাদক জামাল
***পীরগঞ্জ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।***